নিবন্ধ: ইতিহাস ও ঐতিহ্য ইতিহাসে উপেক্ষিত তিতুমীরের বৃহত্তর আন্দোলন! ■ বা বু ল সে ন ■ ■ উদয়পুর, ত্রিপুরা ■ ...
নিবন্ধ: ইতিহাস ও ঐতিহ্য
ইতিহাসে উপেক্ষিত তিতুমীরের বৃহত্তর আন্দোলন!
■ বা বু ল সে ন ■
■ উদয়পুর, ত্রিপুরা ■
পলাশীর যুদ্ধ পরবর্তী কালে তিতুমীরই প্রথম বাঙালি, যিঁনি বৃটিশদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু ইংরেজদের কিছু বন্ধু তাঁকে ইতিহাসের পাতায় দস্যু বানিয়ে দিয়েছেন।বঙ্কিমচন্দ্রও বলেছিলেন, তিতুর বিদ্রোহকে ভালো বলে ইংরেজদের বিরাগ ভাজন কাদাপি হবেন না।
তিতুমীর, যাঁর প্রকৃত নাম সৈয়দ মীর নিসার আলী, তাঁর জন্ম ১৭৮২ সালে বর্তমান উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার চাঁদপুর গ্রামে। জমিদার ও ব্রিটিশদের বিরূদ্ধে সংগ্রামে তাঁর বিখ্যাত বাঁশের কেল্লার জন্য তিঁনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। ইংরেজ এবং জমিদারের সেনাদের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে এই বাঁশের কেল্লাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।
তিতুমীর, যাঁর প্রকৃত নাম সৈয়দ মীর নিসার আলী, তাঁর জন্ম ১৭৮২ সালে বর্তমান উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার চাঁদপুর গ্রামে। জমিদার ও ব্রিটিশদের বিরূদ্ধে সংগ্রামে তাঁর বিখ্যাত বাঁশের কেল্লার জন্য তিঁনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। ইংরেজ এবং জমিদারের সেনাদের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে এই বাঁশের কেল্লাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।
উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দশকে গরীব অশিক্ষিত কৃষকদের নিয়ে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার তিতুমীর নারিকেল বেডে (যশোহর) গ্রামে তিঁনি একটা অস্থায়ী বাঁশের কেল্লা গড়ে তুলেছিলেন। তাতে বৃটিশ ও জমিদারদের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহী দল গড়ে তুলেছিলেন। পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে তাঁর ব্যাপক প্রভাব ছিলো। ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনারা তাঁকে এই বাঁশকেল্লাতেই গুলি করে হত্যা করেছিল এবং তার বাঁশের কেল্লা ভেঙ্গে দিয়েছিল। তিতুমীরের অনেক অনুগামীদের মেরে ফেলে এবং অনেককে বন্দী করে পানাগড়ে দ্বিপান্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
তিতুমীর হিন্দু জমিদার কৃষ্ণদেব রায় কর্তৃক মুসলমানদের উপর বৈষম্যমূলক আরোপিত ‘দাঁড়ির খাজনা’ এবং মসজিদের করের তীব্র বিরোধিতা করে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিলেন।
তিতুমীর ও তাঁর অনুসারীদের সাথে স্থানীয় জমিদার ও নীলকর সাহেবদের মধ্যে বিরোধ বাধে। তিতুমীর প্রথমদিকে জমিদারের লাঠিয়াল হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তিনি তাঁর অনুগামী দের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলেছিলেন। তিতুমীরের অনুগামীর সংখ্যা বেড়ে এক সময় ৫ হাজারের মতো ছিল বলে জানা যায় । তারা সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হয়। ১৮৩১ সালে বারাসতের বাদুড়িয়া থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে নারিকেলবেডে গ্রামে তাঁরা এই বাঁশের কেল্লাটি তৈরি করেন। বাঁশ এবং কাঁদা দিয়ে তাঁরা এই কেল্লা নির্মাণ করেন।
তিতুমীর বর্তমান চব্বিশ পরগনা, নদীয়া এবং ফরিদপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অধিকার নিয়ে সেখানে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্থানীয় জমিদারদের নিজস্ব বাহিনী এবং ব্রিটিশ বাহিনী তিতুমীরের হাতে বেশ কয়েকবার পরাজিত হয়েছিল। হান্টারের মতে , বারাসত বিদ্রোহে প্রায় ৮৩ হাজার কৃষক তিতুমীরের পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন।
১৮৩১ সালের ১৪ নভেম্বর কর্নেল হার্ডিং-এর নেতৃত্বে ইংরেজ সেনা ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তিতুমীর ও তাঁর অনুগামীদের বাঁশের কেল্লা আক্রমণ করে। সাধারণ তলোয়ার এবং হাল্কা অস্ত্র নিয়ে তিতুমীর ও তাঁর সৈন্যরা ইংরেজ সৈন্যদের আধুনিক অস্ত্রের সামনে দাঁড়াতে পারে নি। ১৯শে নভেম্বর তিতুমীর ও তাঁর কিছু সহচর নিহত নন। তাঁর বাহিনীর প্রধান মাসুম খাঁ বা গোলাম মাসুমকে ফাঁসি দেওয়া হয়। বাশেঁর কেল্লা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
অনেককে তিতুমীরের বিদ্রোহকে স্বাধীনতা সংগ্রাম হিসেবে মানতে রাজি নয়। তাদের মতে তিঁনি একজন লাঠিয়াল এবং দস্যু ছিলেন। সে কিনা অশিক্ষিত ধর্মান্ধ মুসলমান ছিল। তারা বলতে চান, তিতুমীর ধর্মান্তরণের কাজ ও নারী অপহরণ করতেন। তাই জমিদাররা তার বিদ্রোহকে দমন করতে বৃটিশদের সাহায্য নিয়েছিলেন।
ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রামটা কিভাবে দস্যুগিরি হয়? তিঁনি অশিক্ষিত ছিলেন , অশিক্ষিত কৃষকদের নিয়ে জমিদার ও বৃটিশদের শোষণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। আসলে বলার চেষ্টা হয়েছে , সে কিনা মুসলমান ধর্মান্ধ ছিল। শাসক এবং শোষিতদের মধ্যে ধর্মকে নিয়ে বিভাজনের কৌশলটা বৃটিশদের তৈরী করা, আগেও ছিলো এখনো আছে।
তিতুমীর যে সব কৃষকদের নিয়ে বিদ্রোহ করেছিলেন তাদের মধ্যে মুসলমানদের সংখ্যাটাই বেশি ছিল। ইতিহাসের থেকে এই বিপ্লবীদের মুছে ফেলা হয়েছে। আজ দেশ ও তৎকালীন কৃষক সমাজের জন্যে তাঁর এই মহান ঐতিহাসিক বিদ্রোহকে সম্মান জানানো দরকার।
তিতুমীর ও তাঁর অনুসারীদের সাথে স্থানীয় জমিদার ও নীলকর সাহেবদের মধ্যে বিরোধ বাধে। তিতুমীর প্রথমদিকে জমিদারের লাঠিয়াল হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তিনি তাঁর অনুগামী দের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলেছিলেন। তিতুমীরের অনুগামীর সংখ্যা বেড়ে এক সময় ৫ হাজারের মতো ছিল বলে জানা যায় । তারা সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হয়। ১৮৩১ সালে বারাসতের বাদুড়িয়া থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে নারিকেলবেডে গ্রামে তাঁরা এই বাঁশের কেল্লাটি তৈরি করেন। বাঁশ এবং কাঁদা দিয়ে তাঁরা এই কেল্লা নির্মাণ করেন।
তিতুমীর বর্তমান চব্বিশ পরগনা, নদীয়া এবং ফরিদপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অধিকার নিয়ে সেখানে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্থানীয় জমিদারদের নিজস্ব বাহিনী এবং ব্রিটিশ বাহিনী তিতুমীরের হাতে বেশ কয়েকবার পরাজিত হয়েছিল। হান্টারের মতে , বারাসত বিদ্রোহে প্রায় ৮৩ হাজার কৃষক তিতুমীরের পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন।
১৮৩১ সালের ১৪ নভেম্বর কর্নেল হার্ডিং-এর নেতৃত্বে ইংরেজ সেনা ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তিতুমীর ও তাঁর অনুগামীদের বাঁশের কেল্লা আক্রমণ করে। সাধারণ তলোয়ার এবং হাল্কা অস্ত্র নিয়ে তিতুমীর ও তাঁর সৈন্যরা ইংরেজ সৈন্যদের আধুনিক অস্ত্রের সামনে দাঁড়াতে পারে নি। ১৯শে নভেম্বর তিতুমীর ও তাঁর কিছু সহচর নিহত নন। তাঁর বাহিনীর প্রধান মাসুম খাঁ বা গোলাম মাসুমকে ফাঁসি দেওয়া হয়। বাশেঁর কেল্লা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
অনেককে তিতুমীরের বিদ্রোহকে স্বাধীনতা সংগ্রাম হিসেবে মানতে রাজি নয়। তাদের মতে তিঁনি একজন লাঠিয়াল এবং দস্যু ছিলেন। সে কিনা অশিক্ষিত ধর্মান্ধ মুসলমান ছিল। তারা বলতে চান, তিতুমীর ধর্মান্তরণের কাজ ও নারী অপহরণ করতেন। তাই জমিদাররা তার বিদ্রোহকে দমন করতে বৃটিশদের সাহায্য নিয়েছিলেন।
ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রামটা কিভাবে দস্যুগিরি হয়? তিঁনি অশিক্ষিত ছিলেন , অশিক্ষিত কৃষকদের নিয়ে জমিদার ও বৃটিশদের শোষণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। আসলে বলার চেষ্টা হয়েছে , সে কিনা মুসলমান ধর্মান্ধ ছিল। শাসক এবং শোষিতদের মধ্যে ধর্মকে নিয়ে বিভাজনের কৌশলটা বৃটিশদের তৈরী করা, আগেও ছিলো এখনো আছে।
তিতুমীর যে সব কৃষকদের নিয়ে বিদ্রোহ করেছিলেন তাদের মধ্যে মুসলমানদের সংখ্যাটাই বেশি ছিল। ইতিহাসের থেকে এই বিপ্লবীদের মুছে ফেলা হয়েছে। আজ দেশ ও তৎকালীন কৃষক সমাজের জন্যে তাঁর এই মহান ঐতিহাসিক বিদ্রোহকে সম্মান জানানো দরকার।
(বাঙালির DNA সন্ধানে, ১৯।১১।২০১৭)
COMMENTS