নিবন্ধ: সমাজ ও রাজনীতি দূর্নীতি মুক্ত সমাজ গড়তে চাই স্রষ্টার বিধান মহঃ আব্দুল আজীজ মোল্যা আমাদের দেশ ভারতবর্ষ আজ...
নিবন্ধ: সমাজ ও রাজনীতি
মহঃ আব্দুল আজীজ মোল্যা
আমাদের দেশ ভারতবর্ষ আজ চরম সংকটের মধ্যে অবস্থান করছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে, অর্থনৈতিক বিভাগে, সামাজিক প্রেক্ষাপটে, প্রশাসনিক দপ্তরে এমনকি উচ্চ-শিক্ষাঙ্গন গুলোতে চলছে একপ্রকার লাগামহীন অরাজকতা। দূর্নীতি, স্বজনপোষন, দলপ্রীতির কারণে প্রতিটি দপ্তরে আপামর জনগণ প্রয়োজনের তাগিদে গিয়ে বারংবার হয়রানির স্বীকার হচ্ছে। নিরীহ মানুষের দুর্দশায় সরকারী আধিকারিকদের প্রাণ কেঁদে ওঠে না। বরং জনসাধারণকে কষ্টের মধ্যে ফেলে দেওয়াটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। সহজে কাউকে রেশনকার্ড না দেওয়া, মজলুম মানুষের থানায় এ.আই.আর. না নেওয়া, ভূমি ও রাজস্ব দপ্তরে বছরের পর বছর কোন সধারণ জমি সংক্রান্ত কেস ঝুলে থাকা, আদালতের অবহেলায় বিনাবিচারে চোদ্দ বছর ধরে নিরপরাধ মানুষের জেলে কাটানো, প্রকৃত খুনী আসামী অর্থের জোরে জামিন নিয়ে বাইরে ঘুরে বেড়ানো আর সন্দেহের বশে ধৃত ব্যাক্তি করাগারে বন্দী থাকা; এ সব যেন গা-সওয়া হয়েগেছে।
দেশ পরিচালক মন্ত্রী ও আমলারা দূর্নীতির দায়ে ধরা পড়ে, কিন্তু জামিন নিয়ে রাজনীতিতে বীরের সম্মান লাভ করে। তথ্য জানার অধিকার আইন চালু হওয়ার ফলে মানুষ অনেক তথ্য জানতে পারছে বটে, কিন্তু প্রতিকারের পথ অধরাই থেকেগেছে। যদিও কে কত বড়ো চোর, অপরাধী, দুর্নীতিগ্রস্ত, দেশের সম্পদ লুঠকারী, অধিকার হরণকারী এসব এখন দিবালোকের মত স্বচ্ছ! কিন্তু এদের প্রতিহত করার পথ কী?
দেশ স্বাধীন হয়েছে। আগের তুলনায় শিক্ষার হার বেড়েছে। বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে উন্নত হয়েছে। কিন্তু অমানবিকতা, শোষণ-নিপীড়ন, দূর্নীতি স্বজন-পোষণ কি বন্ধ হয়েছে? না, শিক্ষার সঙ্গে এগুলো সমানুপাতিক ভাবে বেড়ে চলেছে। আজ মুর্খ মানুষের তুলনায় বেশী দুর্নীতিগ্রস্ত, অমানবিক ও অত্যাচারি হয়ে উঠেছে। এর কারণ কি? অনেকে বলবেন মানুষকে আরও সচেতন করতে হবে, গোয়েন্দা বাহিনীকে আরও সক্রিয় করতে হবে। তবেই দুর্নীতি বন্ধ হবে। কিন্তু আমরা দেখছি প্রতিটি সরকার পরিবর্তনের পর আইন পাশ করে কড়া দাওয়াই দেওয়া হচ্ছে, তবুও অপরাধ প্রবণতা কমছে না। টু জি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি, কমনওয়েলথ গেম কেলেঙ্কারি, পশু খাদ্য কেলেঙ্কারি, সারদা চিট কেলেঙ্কারি, নারদ কান্ড এসব হিমশৈলের চূড়া মাত্র। এসব কোন মূর্খ অর্বাচীন করেছে?
মানুষের আছে দুটো সত্ত্বা। এক দৈহিক সত্ত্বা, অন্যটি মানবিক সত্ত্বা। আমরা দেহ সত্ত্বাকে বাঁচানোর জন্যে বা উন্নত করার জন্যে চেষ্টা করি। কিন্তু মানবিক সত্ত্বাকে উন্নত করতে আদৌ কোন প্রচেষ্টা করিনা। দেহসত্ত্বার সুখের জন্য মানুষ নানা উপায়ে অর্থ রোজগার ও সংগ্রহ করার চেষ্টা করে। সৎ উপায়ে না হলে অসৎ উপায়ে যেন তেন প্রকারে সম্পদ অর্জন করাটাই এখন অধিকাংশ মানুষের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নৈতিকতার পাঠ না থাকার কারণে, ধর্মকে ত্যাগ করার কারণে, পরকালীন জবাবদিহির চেতনাকে ভুলে যাওয়ার কারণে, স্রষ্টার বিধান অগ্রাহ্য করার কারণে আজ সারা পৃথিবীর মানুষ বস্তুবাদী সমাজব্যবস্থার দিশাহীন সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, হত্যা-লুন্ঠন এ সব অনৈক কাজগুলো বিশ্বাসহীন আদর্শের ফসল। দেহ সত্ত্বার সুখের আয়োজন থাকলেও মানবিক সত্ত্বাকে লালন না করার ফলে মুর্খ-শিক্ষিত, নেতা-মন্ত্রী, উকিল-মোক্তার, রাজা-প্রজা সবাই আজ বিশ্ববিধাতার অভিসম্পাদে পরিণত হয়েছে।
সত্যিই কি আমরা এই অভিশাপ থেকে বাঁচতে চাই? এইদেশকে যদি পত্র-পল্লবে, ফুলে-ফলে সুশোভিত করতে চাই, তবে মনুষকে তার মানবীয় সত্ত্বার পুনঃজাগরণ ঘটাতে হবে। মানবতার শ্রেষ্ঠ্য পথপ্রদর্শক পয়গম্বব তাঁর বানীতে বলেছেন, "জেনেরাখো, পৃথিবীতে তোমরা এক একজন দায়িত্বশীল, পরকালে বিচারের দিনে তোমাদের প্রত্যেককে দায়িত্বশীলতা সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে।"
----●----
(লেখক শিক্ষক সোনাকেনিয়া বিদ্যাবীথি, হাবড়া, প্রত্যয় পত্রিকায় মার্চ-মে, ২০১৭ সংখ্যায় প্রকাশিত)
দেশ পরিচালক মন্ত্রী ও আমলারা দূর্নীতির দায়ে ধরা পড়ে, কিন্তু জামিন নিয়ে রাজনীতিতে বীরের সম্মান লাভ করে। তথ্য জানার অধিকার আইন চালু হওয়ার ফলে মানুষ অনেক তথ্য জানতে পারছে বটে, কিন্তু প্রতিকারের পথ অধরাই থেকেগেছে। যদিও কে কত বড়ো চোর, অপরাধী, দুর্নীতিগ্রস্ত, দেশের সম্পদ লুঠকারী, অধিকার হরণকারী এসব এখন দিবালোকের মত স্বচ্ছ! কিন্তু এদের প্রতিহত করার পথ কী?
দেশ স্বাধীন হয়েছে। আগের তুলনায় শিক্ষার হার বেড়েছে। বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে উন্নত হয়েছে। কিন্তু অমানবিকতা, শোষণ-নিপীড়ন, দূর্নীতি স্বজন-পোষণ কি বন্ধ হয়েছে? না, শিক্ষার সঙ্গে এগুলো সমানুপাতিক ভাবে বেড়ে চলেছে। আজ মুর্খ মানুষের তুলনায় বেশী দুর্নীতিগ্রস্ত, অমানবিক ও অত্যাচারি হয়ে উঠেছে। এর কারণ কি? অনেকে বলবেন মানুষকে আরও সচেতন করতে হবে, গোয়েন্দা বাহিনীকে আরও সক্রিয় করতে হবে। তবেই দুর্নীতি বন্ধ হবে। কিন্তু আমরা দেখছি প্রতিটি সরকার পরিবর্তনের পর আইন পাশ করে কড়া দাওয়াই দেওয়া হচ্ছে, তবুও অপরাধ প্রবণতা কমছে না। টু জি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি, কমনওয়েলথ গেম কেলেঙ্কারি, পশু খাদ্য কেলেঙ্কারি, সারদা চিট কেলেঙ্কারি, নারদ কান্ড এসব হিমশৈলের চূড়া মাত্র। এসব কোন মূর্খ অর্বাচীন করেছে?
মানুষের আছে দুটো সত্ত্বা। এক দৈহিক সত্ত্বা, অন্যটি মানবিক সত্ত্বা। আমরা দেহ সত্ত্বাকে বাঁচানোর জন্যে বা উন্নত করার জন্যে চেষ্টা করি। কিন্তু মানবিক সত্ত্বাকে উন্নত করতে আদৌ কোন প্রচেষ্টা করিনা। দেহসত্ত্বার সুখের জন্য মানুষ নানা উপায়ে অর্থ রোজগার ও সংগ্রহ করার চেষ্টা করে। সৎ উপায়ে না হলে অসৎ উপায়ে যেন তেন প্রকারে সম্পদ অর্জন করাটাই এখন অধিকাংশ মানুষের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নৈতিকতার পাঠ না থাকার কারণে, ধর্মকে ত্যাগ করার কারণে, পরকালীন জবাবদিহির চেতনাকে ভুলে যাওয়ার কারণে, স্রষ্টার বিধান অগ্রাহ্য করার কারণে আজ সারা পৃথিবীর মানুষ বস্তুবাদী সমাজব্যবস্থার দিশাহীন সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, হত্যা-লুন্ঠন এ সব অনৈক কাজগুলো বিশ্বাসহীন আদর্শের ফসল। দেহ সত্ত্বার সুখের আয়োজন থাকলেও মানবিক সত্ত্বাকে লালন না করার ফলে মুর্খ-শিক্ষিত, নেতা-মন্ত্রী, উকিল-মোক্তার, রাজা-প্রজা সবাই আজ বিশ্ববিধাতার অভিসম্পাদে পরিণত হয়েছে।
সত্যিই কি আমরা এই অভিশাপ থেকে বাঁচতে চাই? এইদেশকে যদি পত্র-পল্লবে, ফুলে-ফলে সুশোভিত করতে চাই, তবে মনুষকে তার মানবীয় সত্ত্বার পুনঃজাগরণ ঘটাতে হবে। মানবতার শ্রেষ্ঠ্য পথপ্রদর্শক পয়গম্বব তাঁর বানীতে বলেছেন, "জেনেরাখো, পৃথিবীতে তোমরা এক একজন দায়িত্বশীল, পরকালে বিচারের দিনে তোমাদের প্রত্যেককে দায়িত্বশীলতা সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে।"
----●----
(লেখক শিক্ষক সোনাকেনিয়া বিদ্যাবীথি, হাবড়া, প্রত্যয় পত্রিকায় মার্চ-মে, ২০১৭ সংখ্যায় প্রকাশিত)
COMMENTS