নিবন্ধ: রাজনৈতিক পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্-কালে কেমন আছে বাংলা রাকিবুল ইসলাম রামনবমীর উত্তাপের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের ভোটের ঢাকে কাঠ...
নিবন্ধ: রাজনৈতিক
পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্-কালে কেমন আছে বাংলা
রাকিবুল ইসলাম
রামনবমীর উত্তাপের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ল। হঠাৎ ঘোষণা হল ভোটের তারিখ, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে। এরই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতাও শুরু হয়ে গেল। আর এই ভোট কেন্দ্রিক তৎপরতায় প্রথমেই শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দলের বলি হল এক ইমাম সাহেবে সন্তান মালদার রিজাওনুর রহমান (২৬)। রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে যখন এক ইমাম সাহেবের সন্তানের নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় গোটাদেশ বিজেপি ও আর.এস.এস. এর উপর নিন্দার ঝড় বইয়ে ছিচ্ছে, ঠিক তখনই তৃর্ণমূলের গোষ্টি দ্বন্দ্বে ইমাম সাহেবের পুত্রের মৃত্যু বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
২রা এপ্রিল থেকে নমিনেশন জমা দেওয়া শুরু হয়েছে। চারিদিক থেকে অভিযোগ আসছে এই ভোটে শাসকদল বিরোধীদের নমিনেশন জমা দিতে দিচ্ছে না। বিভিন্ন দিক দিয়ে যে খবর আসছে তাতে অনেকগুলো বিষয়ে এবারের নির্বাচন সরকারের কাছে খুবই তাৎপর্য বহন করছে, যদিও বিশেষজ্ঞ মহল বলছেন বেশিরভাগ পঞ্চায়েতগুলোর দখল নেবে শাসকদল। তারপরও বিরোধীদের নমিনেশন জমা দিতে না দেওয়াটা গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যজনক।
বরাবরই পৌরসভার ভোটের তুলনায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাধারণ মানুষের আবেগ একটু বেশি লক্ষ করা যায়। মূলত ভোটের সময় পাড়ার বিভিন্ন মোড়গুলো রাজনীতির চর্চা বেশ জমে ওঠে। দেখা যায় গ্রাম বাংলার খেটে খাওয়া অর্ধ শিক্ষিত, অশিক্ষিত মানুষগুলো খুব বেশি অংশে রাজনৈতিক সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে পড়ে। বারবার পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে দেখাগেছে রাজনৈতিক সংঘর্ষে শিক্ষিত ও উচ্চবর্ণের হিন্দুদের তুলনায় দলিত এবং সংখ্যালঘু জনসংখ্যার জীবন ও সম্পাদ হানি বেশি হয়েছে। নির্বাচনে কমিশনের ভূমিকা নিয়েও বিরোধীদের মধ্যে অনেক অভিযোগ আছে। এবারের নির্বাচনে নমিনেশন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে চারদিক থেকে দাঙ্গা হাঙ্গামার খবর আসছে সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনি ছাড়া কতটা শুষ্ট নির্বাচন হবে সেব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই!
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এখনও কোন মত পাওয়া
যায়নি ভোট পর্বের প্রাথমিক পর্যয়ের হিংসার ব্যাপারে। শাসকদলের এমন উগ্র আচরণ থেকে সাংবাদিকদের পর্যন্ত রেয়াত করা হচ্ছে না। সংবাদিক হামিদের উপর শাসকদলের জঘন্যতম আচরণ মিডিয়ায় প্রকাশ পেয়েছে।
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বিরোধী হিসাবে বারবার বিজেপির নাম উঠে আসছে। জাতীয় কংগ্রেস ও বামদলগুলোর নাম খুব একটা শোনা যাচ্ছে না। তবে নীচের স্তরে অনেক যায়গাতে কংগ্রেসের সঙ্গে বামদলগুলোর জোট হয়েছে। আবার বামফ্রন্টের একটা অংশ একেবারে হতাশ হয়ে লাল থেকে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছে। এদিকে অনেকেই বলেথাকেন সংখ্যালঘু ভোটের ৯০ ভাগ তৃর্ণমূলের সমার্থক, যারা এর আগে বামফ্রন্টকে ভোট দিয়ে ৩৪ বছর সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছিল। তবে মুসলিমদের মধ্যে একটা কথা উঠছে এদেশে বিজেপি দাঙ্গা লাগিয়ে যেমন ভোট ব্যাঙ্ক বাড়াতে চেষ্টা করছে, তেমনি তৃর্ণমূল সরকার দাঙ্গায় মদদ জুগিয়ে যাচ্ছে। তাই তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ কিভাবে ঘটে সেদিকেও অনেকে দৃষ্টি রাখছেন।
এত কিছুর পরেও গণতন্ত্রকামীদের চাওয়া গণতন্ত্রের জয় হোক। বন্ধ হোক সকল প্রাকার হিংসা। জেগে উঠুক নতুন বাংলা সকল বিদ্বেষের বিরুদ্ধে।
COMMENTS