নির্বাচনী পর্যালোচনা: লোকসভা-২০১৯ জঙ্গীপুর একটি সংখ্যালঘু অধ্যসিত অনুন্নত লোকসভা কেন্দ্র। নবাবের পতন হওয়ার পর ইংরেজরা যখন ক্ষম...
নির্বাচনী পর্যালোচনা: লোকসভা-২০১৯
জঙ্গীপুর একটি সংখ্যালঘু অধ্যসিত অনুন্নত লোকসভা কেন্দ্র। নবাবের পতন হওয়ার পর ইংরেজরা যখন ক্ষমতা পেল তারপর থেকে শুরু হল বঞ্চনা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও সেই ট্রাডিশান সমানে চলছে। স্বাধীনতার পর থেকে বাম এবং কংগ্রেস পালা করে এই লোকসভায় ক্ষমতা পেয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশী দিন শাসক করেছে কংগ্রেস। কোন দলই এই এলাকাকে কোন গুরুত্ব দেয়নি। সবচেয়ে দুঃখের এই কেন্দ্রের একদা সাংসদ তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এই কেন্দ্র থেকে জিতলেও কোন অজানা কারণে তিনি কোন উন্নয়ণের পথ দেখাননি। বেশিরভাগ সময় বিজয়ী সাংসদদের এম.পি. ল্যাডের টাকা খরচ হয়নি। সাধারণ জনগণের আর্থসামাজিক মান মানবেতর। প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ হওয়া সত্বেও স্থানীয় জনগণ বাইরে ফেরিওয়ালা, দীনমজুর, কুলি প্রভৃতি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। দারিদ্রতা যাদের নিত্য সঙ্গী তাদের কাছে শিক্ষা গ্রহন বিলাসিতা। ভোট আসলে এই উপেক্ষিত জনগণই রাজনৈতিক দলের কাছে ফেরেশতা হয়ে ওঠে। ভোট পার হলে যে সমস্যা সেই সমস্যা। কোন পরিবর্তন হয়নি আজও।
এবারও জঙ্গীপুরের কংগ্রেসর প্রার্থী ২০১৪ এর বিজয়ী প্রার্থী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। বিগত পাঁচ বছর জঙ্গীপুরের মানুষের সঙ্গে তার কোন যোগাযোগই গড়ে ওঠেনি।
অন্যদিকে শাসক তৃণমূল প্রার্থী নূর বিড়ি কম্পানির মালিক খালিদুর রহমান। যদিও তার খুব পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা নেই।
এবার বামফ্রন্টের প্রার্থী জুলফিকার আলী। গত লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ও সিপিএম প্রার্থীর মধ্যে ব্যবধান ছিল মাত্র আট হাজার ভোটের।
গত লোকসভায় ৯০ হাজারের মত ভোট পাওয়া বিজেপি, মাফুজা খাতুন নামে সদ্য বামফ্রন্ট ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া সংখ্যালঘু মুসলিমকে প্রার্থী করেছে। অনেকে বলছে অভিজিতকে সুবিধা পাইয়ে দিতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। উল্লেখ্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি অথা অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের পিতা প্রণব মুখোপাধ্যায় আরএসএস এর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিতর্ক তৈরী করে ছিলেন।
তবে জঙ্গীপুরে সবচেয়ে নজর কেড়েছে ধর্মনিরপেক্ষ ওয়েলফেয়ার পার্টি অফ ইন্ডিয়া (WPI)-র প্রার্থী এস.কিউ.আর. ইলিয়াস। তিনি পার্টির সর্বভারতীয় সভাপতি। দল তাকে দিল্লি থেকে জঙ্গীপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে। যদিও একজন সর্বভারতীয় ফিগার ইলিয়াসকে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো বহিরাগত বলে প্রচার করছে। অনেকে এ কথার উত্তরে বলছেন, ঘরের ছেল হয়ে যখন অভিজিৎ আমাদের কোন উন্নয়ণ করেনি, তখন আর উন্নয় নিয়ে এত ভাবনা কিসের?
পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে ইতিহাস সমৃদ্ধ জেলা মুর্শিদাবাদ আজ সবদিক দিয়ে পিছিয়ে। একটা পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ও এখানে নেই। সেখানে মানুষকে শুধু ভোট ব্যাঙ্ক হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এবারের মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে যে উন্মাদনা তাতে অঘটন কিছু ঘটলেও ঘটতে পারে।
COMMENTS