বিশেষ প্রতিবেদন: শিক্ষা ও জীবিকা প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক: আর ইন্ডিয়া আইডিয়াল টিচার্স এসোসিয়েশন (AIITA) "কোভিড পরিস্থিতিঃ বিপর্যস্ত পঠন...
বিশেষ প্রতিবেদন: শিক্ষা ও জীবিকা
প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক:
আর ইন্ডিয়া আইডিয়াল টিচার্স এসোসিয়েশন (AIITA) "কোভিড পরিস্থিতিঃ বিপর্যস্ত পঠন-পাঠন ও উত্তোরণের উপায়" এই শিরোনামে একটা খুব বড় ধরনের অনলাইন সেমিনারের আয়োজন করে। এই অনলাইন সেমিনারে উপস্থিত বেশীরভাগ বক্তাদের মধ্যে যে বিষয়টি উল্লেখযোগ্য ভাবে উঠে আসে করোনা অতিমারির সময়ে সরকার স্কুল বন্ধ রেখে অনলাইন শিক্ষার যে ব্যবস্থা করেছে তাতে দেশে একটা ক্ষুদ্র অংশের মানুষ উপকৃত হচ্ছে। বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে সমাজের বৃহত্তর অংশের মানুষেরা। এখনও দেশের অনেকাংশে বিদ্যুৎ বা ইন্টারনেট পরিষেবা সুলভ নয়। ফলে অনলাইন সুবিধা থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী। বক্তারা এটাও উল্লেখ করেন ক্লাসরুমের বিকল্প কখনোই অনলাইন শিক্ষা হতেপারে না, বিশেষত প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা অনলাইন ক্লাসে খুব একটা আগ্রহ অনুভব করে না। পাশাপাশি বক্তারা তুলে ধরেন লকডাউন পরবর্তী সময়ে ড্রপ আউট বৃদ্ধি পেয়েছে। লকডাউনে পরিবারের অর্থনৈতিক ঘাটতি মেটাতে শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা বন্ধ করে বিভিন্ন কাজে ঢুকে পড়েছে।
রহটপুর হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক শহিদুর রহমান বলেন, অতিমারির কারণে তো পৃথিবীর কোন কাজ বন্ধ নেই বন্ধ কেবল স্কুল গুলো! জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মত পরীক্ষা হল, শুধু হল না মাধ্যমিক আর উচ্চমাধ্যমিকের মত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। তিনি আরো বলেন এই করোনা অতিমারির কারণে বাল্য বিবাহ বেড়ে গেছে।
স্টুডেন্ট ইসলামীক অর্গানাইজেশন এর রাজ্য সভাপতি সাব্বির আহমেদ তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে উল্লেখ করেন ড্রপ আউট বেড়ে গেছে। তাছাড়া বর্ণালী সাহার আত্মহত্যার কথা উল্লেখ করে বলেন করোনা অতিমারির কারণে পরীক্ষা না হওয়ায় বর্ণালী সাহার মত নক্ষত্র হারিয়ে গেছে।
মানিকচক সার্কেলের এসআইএস মোঃ পারভেজ বলেন সরকার চাইছেন স্কুল খুলতে যদি কোন সমস্যা হয় তবে সে দায় কে নেবে!
ইউনিসেফে প্রাক্তন কনসালটেন্ট মেচবাহার শেখ বলেন কোন প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে প্রথমে রাষ্ট্র চাই মানুষের প্রাণ রক্ষা করতে সেই কাজটাই করছে। তবে শিক্ষাক্ষেত্রে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে সেটা কতটা প্রয়োগ করা যাচ্ছে এ ব্যাপারে শিক্ষকদের পরিসরে মনিটরিং করার ব্যবস্থা করতে হবে।
শহীদ নুরুল ইসলাম কলেজের প্রিন্সিপাল ডক্টর আফসার আলী তার বক্তব্যে বলেন, একটা এডুকেশনাল মার্ডার হচ্ছে এর দায় কে নেবে!
ডিএনসি কলেজের বাংলা বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডঃ সুনীল কুমার দে প্রশ্ন তোলেন, সবই চলছে বাস-ট্রেন, মিটিং মিছিল ধর্মীয়- সামাজিক অনুষ্ঠান তবে বন্ধ কেন স্কুল!
আলিয়া ইউনিভার্সিটির আরবি বিভাগের প্রধান ডঃ সাইদুর রহমান বলেন, আমরা শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা শিক্ষার এই বেহাল দশা দেখে তো বসে থাকতে পারিনা।
বিশিষ্ট অধ্যাপিকা তথা লেখিকা ডক্টর মীরাতুন নাহার বলেন, শিক্ষা এখন ক্রয় যোগ্য পণ্য হয়ে উঠেছে। এখন শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্য হয়েছে বড় চাকরি আর বিপুল অর্থ উপার্জন। তিনি আরো বলেন পরীক্ষার ব্যবস্থাকে একেবারে গুরুত্বহীন করে দেয়া হয়েছে। সেজন্য তিনি শিক্ষক, স্কুল কর্তৃপক্ষ, স্কুল পরিদর্শক, অভিভাবক এবং শিক্ষা অনুরাগী ব্যক্তিদের কাছে আবেদন জানান কিভাবে স্কুল খোলা যাবে তার পরিকল্পনা তৈরি করে সরকারকে বাস্তবায়নের চাপ দেওয়া।
আজকের ওয়েবনারে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আইটার কেন্দ্রীয় সম্পাদক আসলাম ফিরোজ, জামায়াতে ইসলামী হিন্দের রাজ্য শিক্ষা শিক্ষা বোর্ডের সহ-সভাপতি মোজাফফর আলী, ডক্টর আয়াতুল্লাহ ফারুক মোল্লা, শেখ মোস্তফা জামান, মাহবুল হক প্রমূখ ব্যক্তিগণ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শিক্ষক জানে আলম।
এমতাবস্থায় গ্রান্ড ওয়েবিনার থেকে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে যে সবধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবিলম্বে চালু করা হোক।
COMMENTS