নিবন্ধ: বাবুলের পরে কে? বিজেপির কোন রণকৌশল নয় তো! রাকিবুল ইসলাম বিজেপি থেকে তৃণমূল বাবুলের বাংলাকে গড়ার স্বপ্ন না নিজেকে আরও গোছানো চেষ্টা...
নিবন্ধ:
বাবুলের পরে কে? বিজেপির কোন রণকৌশল নয় তো!
রাকিবুল ইসলাম
বিজেপি থেকে তৃণমূল বাবুলের বাংলাকে গড়ার স্বপ্ন না নিজেকে আরও গোছানো চেষ্টা এ প্রশ্ন রয়ে গেল! বঙ্গ রাজনীতিতে দল বদল আর রং বদল একটা সাধারণ ব্যাপার। আজ তৃণমূল, কাল বিজেপি এটাই এখন ঘটনা। অন্য দলের নেতাদের উঁচু পদে দিয়ে দলে টানার রণকৌশল বঙ্গ রাজনীতিতে আমদানি করে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশে বিপুল সংখ্যক আসন জিতে ক্ষমতায় আসার পরও সেই ধারাবাহিকতায় সমানভাবে বজায় রেখে চলেছেন।
একুশের বিধানসভা ভোটের আগে প্রচুর বিধায়ক রাতারাতি সবুজ থেকে গেরুয়া হয়েছিল। তাদের অনেকেই আবার স্বগৌরবে বিজেপির আদর্শ ছেড়ে তৃণমূলের ছাতার নীচে আশ্রয় নিচ্ছে। একদা তৃণমূলের চাণক্য মুকুল রায় নারদ মামলায় ইডির কাছে হেনস্থা হচ্ছিলেন। পরে রং পাল্টে বিজেপির ছাতায় আশ্রয় নিল। ব্যাস্ সব পাপ সাফ! তবে মুকুল রায় সুযোগ বুঝে আবার নিজের হাতে গড়া দলে স্বগৌরবে ফিরে এসে চাণক্যের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। তবে গায়ক বাবুল সুপ্রিয়র বিষয়টা ভিন্ন। তার রাজনৈতিক উত্থান হিন্দুত্ববাদী বিজেপির হাত ধরে। বর্তমানে তিনি আসানসোলের সাংসদ। কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। মন্ত্রীত্ব খোয়ানোর পরে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে ছিলেন রাজনীতি থেকে তিনি একেবারে বিদায় নিচ্ছেন। তার নামে চারিদিকে যখন চর্চা চলতে থাকে তিনি জোরালো ভাবে বলেন বিজেপি ব্যতিত অন্য কোন রাজনৈতিক দলের যোগ দেওয়ার কোন পরিকল্পনা তার নেই। আজ তার ইউটার্ন তার ভক্তদের হতাশ করবে।
বাবুল সুপ্রিয় তার বিজেপি থেকে তৃণমূলে যুক্ত হওয়ার ব্যপারে সাংবাদিক বৈঠকে কিছু ব্যক্তিগত সুযোগের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন তার মেয়ের ভর্তির ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র ডেরেক'ও ব্রায়েন এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের খুব সহযোগিতা করেছেন। তাছাড়া তিনি সাত বছর ধরে সাংসদ হিসেবে বাংলার মানুষের সেবা করে আসছেন, তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে যে কাজ দেবেন বলেছেন সেই কাজ তৃণমূলের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে চাইছেন। তাই তার এই দলত্যাগ।
এইভাবে বিরোধী বিজেপি থেকে একের পর এক তৃণমূলে যোগ দিয়ে যারা একটা হিন্দুত্ববাদী আদর্শ থেকে ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ গ্রহণ করেছে, আবার ইচ্ছে হলে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে। এদের মাধ্যমে তৃণমূল কী শেষপর্যন্ত ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ ধরে রাখতে সক্ষম হবে! এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন! আবার যেহেতু একটা প্রবাদ চালু আছে প্রেম আর যুদ্ধে কোন নিয়ম খাটে না। এক্ষেত্রে বিজেপির কোন রণকৌশল নয় তো বাংলা তথা ভারতবর্ষ থেকে তৃণমূলের অস্তিত্ব একেবারে মুছে দেওয়ার। সময়ই সে কথা বলবে।
COMMENTS